ক্যাল্কেরিয়া অষ্ট্রীয়েরাম (Calcarea Ostrearum) [ক্যাল্কে - Calc ]
ক্যাল্কেরিয়া কার্বনিকাম
CALCAREA CARBONICA - OSTREARUM (Carbonate of Lime)
[ঝিনুকের খোলার তিনটি স্তরের মধ্যবর্তী স্তর হইতে প্রস্তুতকৃত ঔষধ]
শ্লেষ্মা ও রসপ্রধান ধাতু, সুন্দর চুল, ফর্সা বর্ণ, নীল চক্ষু, সুন্দর চর্ম, যৌবনে মোটা হইবার প্রবণতাযুক্ত ব্যক্তি।
সোরাধাতু, বিবর্ণ, দূর্বল, ভীরু, চলিতে গেলে সহজেই ক্লান্ত হইয়া পড়ে।
মোটা হইবার, স্থূলকায় হইবার, চলৎশক্তি রহিত হইবার প্রবণতাযুক্ত ব্যক্তি।
শিশু-মুখমন্ডল লালবর্ণ, পেশীগুলি থলথলে, সহজেই ঘর্ম হয় এবং তাহার ফলে সহজেই সর্দি লাগে।
মস্তক ও উদর বৃহৎ, ব্রহ্মতালু এবং হাড়ের জোড়াগুলি উম্মুক্ত থাকে, অস্থিসমূহ কোমল, ঐগুলি অতি ধীরে ধীরে গঠিত হইতে থাকে।
অস্থিসমূহের বক্রতা, বিশেষতঃ মেরুদন্ড ও দীর্ঘাস্থিগুলির বক্রতা, হাত-পাগুলি বাঁকিয়া থাকে, বিকৃত হইয়া থাকে, অস্থিগুলি অনিয়মিতভাবে বর্ধিত হইতে থাকে।
নিদ্রাকালে মস্তকে প্রচুর ঘর্ম হয়, উহাতে অনেক দূর জুড়িয়া বালিশ ভিজিয়া যায় (সাইলি, স্যানিকিউ)।
প্রচুর ঘর্ম, প্রধাণতঃ মস্তকের পেছনের দিকে ও ঘাড়ে অথবা বক্ষে এবং দেহের ঊর্ধ্বাশে (সাইলি)।
দন্তোদ্গম বিলম্বিত ও কষ্টকর, তৎসহ চরিত্রগত মস্তকের ঘর্ম ও ব্রহ্মতালু উম্মুক্ত থাকে।
রোগের সময় রোগের আরোগ্যোম্মুখ অবস্থায় ডিম খাইবার প্রবল ইচ্ছা, দূষ্পাচ্য দ্রব্য আহার করিতে চায় (এলু), মাংস খাইবার অপ্রবৃত্তি।
অন্ননালীর অম্লরোগ, টক উদ্গার টক বমন, টকগন্ধ মল, সমস্ত দেহ হইতে টকগন্ধ ছাড়ে (হিপার, রিউম)।
বালিকা হৃষ্টপুষ্ট, রক্তপ্রধান এবং অতি শীঘ্র শীঘ্র বাড়িয়া উঠে।
ঋতুস্রাব নিয়মিত সময়ের পূর্বে , অতি প্রচুর, অতিশয় দীর্ঘকাল স্থায়ী, ইহার পরবর্তী অবস্থায় হরিৎপান্ডুরোগ; রজঃস্রাব অত্যল্প অথবা সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ হয়।
স্ত্রীলোক-ঋতুস্রাব নিয়মিত সময়ের পূর্বে, অতি প্রচুর, পায়ের পাতা দুইটি স্বভাবতঃই ঠান্ডা ও ভিজা থাকে, মনে হয় যেন রোগিনী ঠান্ডা ভিজা মোজা পরিয়া আছেন; শয্যায় শুইলে পদদ্বয় অবিরত ঠান্ডা বোধ হয়।
সামান্য মাত্র মানসিক উত্তেজনায় প্রচুর পরিমাণে ঋতুপ্রবাহ প্রবর্তিত হয় ( সালফ, টিউবার)।
রোগিণীর ভয় হয় তিনি যেন বিচারশক্তি হারাইয়া ফেলিবেন অথবা লোক তাঁহার মানসিক গোলযোগ লক্ষ্য করিবে (এক্টিয়া)।
লম্বা, পাতলা, দ্রুতবর্ধনশীল যুবকদিগের ফুসফুস, সংক্রান্ত পীড়া, দক্ষিণ ফুসফুসের উপরদিকের এক-তৃতীয়াংশ আক্রন্ত হয় ( আর্স -বাম ফুসফুসের উপর অংশ; মার্টাস, সালফ); অনেক সময় ধাতুগত পীড়ায় ইহাই ফসফরাস অপেক্ষা অধিক নির্দিষ্ট হয় (টিউবারকুলিনামের সহিত তুলনা কর)।
পরিপোষণ ক্রিয়ার অসম্পূর্ণতা, অস্থিগঠন ক্রিয়ার অসম্পূর্ণতা জনিত পীড়া, দাঁড়ান ও হাঁটা শিখিতে কষ্ট হয়, শিশুর হাঁটিবার ইচ্ছা বা চেষ্টা থাকে না, ঘর্মবরোধজনিত পীড়া।
ঘর্ম লাগিয়া পায়ের তলা হাজিয়া যায় (গ্র্যাফাই, স্যানিকি)), ফোস্কা জন্মে এবং পদঘর্মে দুর্গন্ধ ছাড়ে।
খোলা বাতাসের আকাঙ্খা (ঘরের মধ্যে থাকাকালে), উহাতে অনুপ্রাণিত উপকৃত এবং বলবিধান করে (পালস, সালফ)।
শীতলতা-সর্বাঙ্গীণ, কোন বিশেষ অঙ্গের ( কেলি বাই), মস্তকের, পাকাশয়ের, উদরের, পায়ের পাতার, পায়ের, শীতল উম্মুক্ত বায়ুতে বিতৃষ্ণা, “উহা যেন রোগীর দেহমধ্যে প্রবেশ করিতে থাকে”, ঠান্ডা আর্দ্র বায়ুতে অত্যনুভূতিপ্রবণতা, অতিশয় সর্দি লাগার প্রবণতা ( সালফারের বিপরীত)।
ঘর্ম- দেহের েএকটি বিশেষ অংশের মস্তকের, মস্তকত্বক ভিজিয়া ঠান্ডা হইয়া যায়; ঘাড়ে, বুকে, বগলে, জননেন্দ্রিয়ে, হাতে, জানুতে পায়ের পাতায় ঘর্ম ( সিপিয়া)।
পাকাশয়গহ্বরটি একখানি উপুড় করা সরার ন্যায় স্ফীত থাকে এবং উহাতে চাপ দিলে বেদনা করে।
ঠান্ডা স্যাঁৎসেতে স্থানে দাঁড়াইয়া থাকার ফলে অথবা ঠান্ডা জলের মধ্যে দাঁড়াইয়া কাজ করার ফলে, অথবা কুম্ভকারদের বা যাহারা ঠান্ডা কাদা লইয়া কাজ করে তাহাদের মূত্রসংক্রান্ত এবং অন্যান্য পীড়া।
কোষ্ঠবদ্ধতা থাকিলে রোগী সব বিষয়েই ভাল থাকে।
মল বিশেষ প্রক্রিয়া ( যন্ত্রাদি) সাহায্যে নির্গত করিতে হয় (এলো, স্যানিকি, সেলিনি, সিপিয়া, সাইলি)।
বেদনাশূণ্য স্বরভঙ্গ প্রাতঃকালে বৃদ্ধি।
চুম্বকশক্তি দ্বারা প্রভাবিত হইবার ইচ্ছা ( ফস)।
সম্বন্ধ- বেলেডোনার অনুপূরক; তরুণ অবস্থায় যেখানে বেলেডোনা প্রয়োজন, পুরাতন অবস্থায় তাহতেই ক্যাল্কেরিয়া আবশ্যক হয়।
লাইকো, নাক্স, ফস ও সাইলিসিয়ার পূর্বে ক্যাল্কেরিয়া ভাল কাজ করে।
ইহা নাই এসি, পালস ও সালফের পর ভাল কাজ করে ( বিশেষতঃ যদি চক্ষুতারকাদ্বয় প্রসারিত থাকে)। ইহার পর নাসিকার সর্দিতে কেলি বাই প্রয়োজন হয়।
হ্যানিম্যানের মত অনুসারে নাই এসি ও সালফের পূর্বে ক্যাল্কেরিয়া ব্যবহার করা উচিত নহে, উহাতে অযথা উপসর্গের সৃষ্টি হইতে পারে।
শিশুদিগের ক্ষেত্রে েইহা পুনঃপুন প্রয়োগ করা যাইতে পারে।
বয়স্ক লোকদিগের ক্ষেত্রে ইহা পুনঃপুনঃ প্রয়োগ করা উচিত নহে, বিশেষতঃ যদি প্রথম মাত্রায় উপকার হইয়া থাকে তাহা হইলে পরবর্তী মাত্রায় প্রায়ই ক্ষতি হয়।
উপচয়- ঠান্ডা বাতাসে, আর্দ্র আবহাওয়ায়, শীতল জলে স্নান করায় ( এন্টিম ক্রুড); প্রাতে, পূর্ণিমায়।
উপশম-শুষ্ক আবহাওয়ায়, বেদনাম্বিত পার্শ্বে চাপিয়া শুইলে ( ব্রায়ো, পালস)।
[শক্তি ১২, ৩০, ২০০ ]
Md974500@gmail.com
উত্তরমুছুন