এ্যাপেন্ডিসাইটিস [ Appendicitis ]
এ্যাপেন্ডিসাইটিস [ Appendicitis ] এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
অন্ত্রের ভার্মিফরম এ্যাপেন্ডিক্স নামক অংশর প্রদাহকে এ্যাপেন্ডিসাইটিস বলে। এ্যাপেন্ডিক্স ক্ষত হয়ে তা ছিন্ন পর্যন্ত হতে পারে। সার্জারি বা অপারেশনের মাধ্যমে প্রদাহযুক্ত এ্যাপেন্ডিক্সটি কেটে ফেলে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে এবং এটি বেশ জনপ্রিয় পদ্ধতি। তবে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবনের মাধ্যমে এ্যাপেন্ডিক্স এর প্রদাহ বা (Inflammation of Appendix) সারিয়ে তোলা যায় এং রোগীর অপারেশন করার প্রয়োজন হয় না।
এ্যাপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণ (Symptom of Appendicitis)
এই রোগ দুই প্রকার। যথা, সর্দিজ বা (Cattrahal) এবং ক্ষত জনিত বা (Ulcaretive)। যে কোন প্রকারের হোক না কেন, ডানদিকের কুক্ষিদেশে বেদনা এই রোগের প্রথান লক্ষণ বা (Symptom)। নাভী ও এন্টিরিয়র সুপিরিয়র স্পাইন অব দা ইলিয়াম পর্যন্ত একটা রেখা টানলে যে স্থান তার এক বা দুই ইঞ্চি নীচ স্থানে বেদনা দেখা দেয়। এই স্থানকে ম্যাকবর্নিজ পয়েন্ড বলে। ব্যথা কখনো বেশী কখনো বা কম হয়। চাপলে বেদনা বৃদ্ধি পায়। বমি বা বমিবমি ভাব এর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ । পালস বা নাড়ী দূর্বল ও দ্রুত, জ্বরের লক্ষণ প্রায়ই দেখা দেয়। শরীরের তাপ যে খুব বেশী হয় তা নয়। তাপমাত্রা প্রায় ১০০ থেকে ১০২ ডিগ্রী ফারেনাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবার কখনও তাপমাত্র বৃদ্ধিই হয় না। ক্ষুধাহীনতা, কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা একবার কোষ্ঠকাঠিন্য একবার উদরাময় প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায়। পেটের চামড়া কঠিন ও টানটান বোধ হয়। এই স্থান টিপলে একটি শক্ত গুটলির মত অনুভূত হয়। রক্তের WBC বিশেষতঃ Neutrophil বেড়ে যায়।
বহুল ব্যবহৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সমূহঃ-
বেলেডোনা ।- প্রচন্ড জ্বর, জ্বর রাত্রে বৃদ্ধি। জ্বর অবস্থায় অল্প ঘাম। ইলিওসিকেল রিজিওনে প্রচন্ড বেদনা। স্পর্শকাতরতা; হাত এমনটি বিছানার স্পর্শেও বেদনা বৃদ্ধি পায়। বমি বা বমিবমি ভাব।
আর্নিকা মন্ট।- আঘাত লেগে অসুস্থ হলে আর্নিকা বিশেষ ফলপ্রদ। জ্বর, গা হাত বেদনা। বমি, ঘাম।
হিপার সালফ।- পেটে ভয়ানক বেদনা ও ফোলা। পা ছড়াতে পারা যায় না, গুটিয়ে রাখতে হয়। বারবার মলমূত্রের বেগ। অতিরিক্ত পারদ ব্যবহারের পর পীড়া।
ল্যাকেসিস।- পেট ফোলা, স্পর্শে বেদনাবোধ, কোষ্ঠ-কাঠিন্য। মূত্রস্বল্পতা। ব্যথা পা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। চিৎ হয়ে শুতে এবং পা গুটিয়ে রাখতে হয়। বিকাল ৩টার পর জ্বর বৃদ্ধি পায়।
লাইকোপোডিয়াম।- পেটে ভয়ানক বেদনা। অতিরিক্ত বায়ু সঞ্চার। উদ্গার, কোষ্ঠবদ্ধতা। মূত্র অল্প ও লাল গুড়াযুক্ত।
মার্কসল।- পেটে বেদনা ও ফোলা। ফোলা স্থান গরম বোধ। অত্যন্ত জ্বর, জ্বরের সময় ঘাম। তীব্র পিপাসা। উদরাময়। আমযুক্ত মলত্যাগ। মূত্র অল্প ও বেগযুক্ত।
প্লাম্বাম মেট।- পেটের দক্ষিণ দিকে অনেকটা স্থান জুড়ে ফোলা, স্পর্শে বেদনাবোধ। হাঁচিতে কাশিতে এবং নড়াচড়াতে ব্যাথা বৃদ্ধি। কোষ্ঠবদ্ধতা। প্রবল পিপাসা।
রাস টক্স।- পানিতে ভিজে বা ঠান্ড লেগে অসুস্থতা। প্রবল জ্বর। নাড়ী ক্ষুদ্র এবং দ্রুত। পেটের ডানদিকের সমস্ত স্থান ফোল এবং বেদনা। রোগী বামদিকে চেপে শুতে পারে না। হাত ও পা গরম ও জ্বালাকর। রাত্রে বেদনা বৃদ্ধি।
থুজা ওক।- জ্বর, শরীর জ্বালা পোড়া। প্রবল পিপাসা। আবৃত স্থানে অত্যন্ত ঘাম দেখা দেয়। মূত্র অল্প এবং জ্বালাকার।
এছাড়া আয়োডিয়াম, কেলিকার্ব, সাইলিসিয়া, আর্সেনিকাম এল্ব, এপিস মেল, নাক্সভোম, পালস, স্ট্যামো, ক্রোটেলাস, নেট সালফ, ফেরাম ফস, ব্রায়োনিয়া, ব্যাপ্টি, বমিতে মলের গন্ধ থাকলে এসাফোডিটা, মার্কসল, ওপিয়াম, প্লাম্বাম মেট, আইরস ট্যানাক্স এ্যাপেন্ডিসাইটিসের শ্রেষ্ঠ ঔষধ।
কোন মন্তব্য নেই