ক্যাল্কেরিয়া ফসফরিকাম ( Calcarea Phosphoricum) [ Calc. Phos.]
ক্যাল্কেরিয়া ফসফরিকাম ( Calcarea Phosphoricum) [ Calc. Phos.] |
* অ্যান্টি সোরিক, এন্টি-সাইকোটিক ও অ্যান্টি টিউবারকুলার।
অন্য নাম- ক্যাল্ক- ফসফেট, ক্যালসিস ফসফাস।
সাধারণ নাম - ফসফেট অফ লাইম।
সংক্ষিপ্ত নাম- ক্যাল্ক ফস ( Calc. Phos.)
ডাঃ হেরিং সর্বপ্রথম চুনের পানির মধ্যে ডাইলিউট ফসফরিক অ্যাসিড ক্রমশঃ মিশ্রিত করে এক প্রকার শ্বেতবর্ণ তলানি (Sediment ) প্রাপ্ত হন। পরে উহা পরিশ্রুত পানিতে ( Distilled Water) উত্তমরূপে ধৌত ও জলীয় শুষ্ক করতঃ ঔষধার্থে ব্যবহৃত করা হয়। ইহা পানি অথবা পরিশ্রুত সুরায় দ্রব হয় না। কেবল নাইট্রিক অ্যাসিড, কার্বলিক অ্যাসিড প্রভৃতি অ্যাসিডে দ্রব হয়। হোমিওপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়ার বিচুর্ণন পদ্ধতি অনুসারে ইহা প্রস্তুত করিতে হয়।
ক্রিয়া- মানবদেহ নির্মাণের পক্ষে ইহা একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য পদার্থ। শরীরস্থ অন্ডলালা(Albumen)নামক পদার্থের সহিত মিশ্রিত হইয়া ইহা কার্যকরী হয়। ফসফেট অফ লাইম অন্ডলালার সহিত মিশ্রিত হইয়া শরীরের প্রধান প্রধান উপাদান সমূহ নির্মাণ করিয়া থাকে; এজন্য যে কোপন প্রকারে এবং যে কোন দ্বার দিয়াই হউক অন্ডলালা নিঃসৃত হইয়া গেলে এই লবণিক পদার্থের আবশ্যক হয়।
ইহার অভাববসশঃ অন্ডলালা অকার্যকরীরূপে নাসাপথে নির্গত হইলে সর্দি, ফুসফুস পথে নিঃসৃত হইলে কাশি, মূত্রপথে নির্গত হইলে অ্যালবুমিনুরিয়া, চর্মপথে নিঃসৃত হইলে ত্বাকে চুলকানি, ক্ষতাদি, নানাপ্রকার চর্মরোগ ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন নামের বিবিধ পীড়া উৎপন্ন হইয়া থাকে।
ইহার অভাববসশঃ অন্ডলালা অকার্যকরীরূপে নাসাপথে নির্গত হইলে সর্দি, ফুসফুস পথে নিঃসৃত হইলে কাশি, মূত্রপথে নির্গত হইলে অ্যালবুমিনুরিয়া, চর্মপথে নিঃসৃত হইলে ত্বাকে চুলকানি, ক্ষতাদি, নানাপ্রকার চর্মরোগ ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন নামের বিবিধ পীড়া উৎপন্ন হইয়া থাকে।
ইহা পাকস্থলীর উপর তীব্র ক্রিয়া প্রকাশ করে। তজ্জন্য ইহার অভাব হইলে নানাপ্রকার লক্ষণযুক্ত অজীর্ণ পীড়া উৎপন্ন হয়। সবুজবর্ণ, পিচ্ছিল ও দুর্গন্ধযুক্ত তরল উষ্ণ মল বায়ুসহ নির্গত হইলে ইহার অভাব সূচিত হয়।
ইহা অস্থির এক প্রকার উপাদান। এমন কি, ইহার অভাব হইল অস্থি নির্মত হইতে পারে না; কেন না অস্থিতে শতকরা 57 ভাগ ফসফেট অফ লাইম দৃষ্ট হয়। এই কারনেই কোন স্থানে অস্থি ভগ্ন হইলে তাহা জোড়া লাগাইবার জন্য, রিকেটস পীড়ায় এবং সর্বপ্রকার অস্থিপীড়ায় ইহার অত্যাশ্চার্য ক্রিয়া লক্ষিত হয়। অস্থির ন্যায় দন্তেও এই ঔষুধের অদ্ভত ক্রিয়া দৃষ্ট হয় বলিয়া শিশুদের দন্তোদগমকালীন উদরাময়, জ্বর, তড়কা প্রভৃতি উপসর্গে ইহা মন্ত্রশক্তির ন্যায় ক্রিয়া করিয়া থাকে।
ডাঃ শুসলার বলেন যে, ইহা রক্তের শ্বেতকনিকা প্রস্তুত করিতে এবং অপর্যাপ্ত শ্বেতকণিকাকে নূতন রক্তকনিকায় পরিণত করিতে বিশেষ কার্যকরী। কোষসমূহকে উত্তেজিত ও শক্তিশালী করিতে ইহার ক্রিয়া বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই জন্য অ্যানিমিয়া, ক্লোরোসিস ইত্যাদি রক্তহীনতা রোগে এবং কোন রোগ ভোগের পর ইহার ব্যবহার অপরিহার্য।
সিরাস ঝিল্লির এপিথিলিয়াম হইতে তরল অন্ডলালাবৎ জলীয় পদার্থ নিঃসৃত হইলে, ইহার ন্যূনতার বিষয় অবধারণ করা কর্তব্য। এইজন্য হাঁটুসন্ধিতে জল জমিলে এই ঔষুধের ব্যবহার জনিত ক্রিয়ায় ত্বরায় জলীয় পদার্থ শোষিত হইয়া যায়।
স্নায়ুসকলের ধ্বংস নিবারণে ইহা অদ্বিতীয়(কেলি ফস)। এইজন্য বৃদ্ধাবস্থায়, শীর্ণতা রোগে, ক্ষয় রোগে, স্বপ্নদোষ ইত্যাদিতে ইহার ক্রিয়া দর্শন করিলে আশ্চার্য হইতে হয়।
এই ঔষধের ক্রিয়া শরীরস্থ প্রতি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে লক্ষিত হয়। এই ঔষধের ক্রিয়া এত বিস্তৃত যে, ভাবিলে বিষ্ময়ে স্তম্ভিত হইতে হয়। বাইওকেমিক ভৈষজ্যতত্বে যদি কেবল এই একটিমাত্র ঔষধ স্থানপ্রাপ্ত হইতে, তাহা হইলেও ইহার ঋণ চিরকাল অপরিশোধ্য হইয়াই থাকিত।
পরিচয় লক্ষণ-
২) অন্ডলালাবৎ গাঢ়, চটচটে ও স্বচ্ছ স্রাবই ইহার বিশেষ লক্ষণ। যে কোন রোগে এই প্রকার স্রাব লক্ষিত হইবে, দ্বিধা না কিরয়া এই ঔষধ প্রয়োগ করা যাইবে।
৩) যে সমস্ত শিশুর শরীর অত্যন্ত শীর্ণ কঙ্কলসার, পেট ঢাকা, মস্তকটি বৃহৎ মস্তকের হাড়ের জোড়াগুলি বহুদিন হইতে অযুক্তাবস্থায় থাকে, যাহাদের মস্তকের প্রচুর ঘর্ম হয় এবং কোন না কোন প্রকার অস্থি-পীড়ায় ভোগে, তাহাদের পক্ষে ইহা একমাত্র মহৌষধ (সাইলিসিয়া)। সত্যই গন্ডমালা (Scrofulous) ও বাল্যস্থি (Rachitic) বিকৃত ধাতুর রোগীর পক্ষে ইহা মৃত-সঞ্জিবনী সুধাবিশেষ। ষ্ক্রোফুলাধাতু হেতু মেরুদন্ডের বক্রতাও এই ঔষধের বিশেষ পরিচায়ক লক্ষণ।
৪) যে সমস্ত শিশু গৌঁণে হাঁটিতে ও শিখে ও বিলম্বে কথা বলে।
৫) শিশুর দন্ত উঠিতে বিলম্ব এবং দন্তোদ্গমনকালীন বিবিধ উপসর্গে, যেনন-জ্বর, কাশি, উদরাময়, তড়কা প্রভৃতিতে ইহা অব্যর্থ।
৬) যে সমস্ত যুবক-যুবতী দ্রুত বর্ধিত হয়, অর্থাৎ লম্বা হয়।
৭) শিশু অতিশয় খিটখিটে ও ভীতুচিত্ত।
৮) শোক, দুঃখ, বিরক্ত ও প্রেমে নৈরাশ্যবশতঃ যে সকল পীড়া হয়।
৯) যাহাদের স্মরণশক্তি অত্যন্ত হ্রাস হইয়াছে, মানসিক পরিশ্রম করিতে অসমর্থ হয় এবং যাহাদের পীড়ার বিষয় চিন্তা করিলেই পীড়ার বৃদ্ধি হয়।
১০) যাহাদের উৎসাহ উদ্যম একেবারে নিভিয়া যায়, কোন কার্য করিতে ইচ্ছা করে না।
১১) যাহারা অতিশয় দুর্বল, রক্তহীন, ফ্যাকাশে-তাহাদের যে কোন রোগে। টাইফয়েড ইত্যাদি কোন প্রকার রোগ ভোগের পর ক্ষয়ের পুরণার্তে ইহার ব্যবহার আবশ্যক।
১২) যে সমস্ত স্ত্রীলোক বহু সন্তান প্রসব করিয়া অথবা অধিক দিন ধরিয়া সন্তানকে স্তন্যদানে দুর্বল হইয়া পড়িয়াছেন।
১৩) রক্তাল্পতা পীড়ার প্রধান ঔষধ, বিশেষতঃ যদি ইহা পরিপাক ক্রিয়ার বিশৃঙ্খলাবশতঃ জন্মিয়া থাকে।
১৪) কোন কারণ ব্যতীত যাহার ক্রমশঃ শীর্ণ হইয়া পড়িতেছে, তাহাদের পক্ষে ইহা বিশেষ উপযোগী। শিশু উদরপূর্ণ করিয়া আহার করে, অথচ শীর্ণ (marasmus)হইতে থাকে।
১৬) যক্ষারোগীদের অত্যধিক নৈশঘর্ম, বিশেষতঃ মস্তকে। শরীর ক্রমশঃ শীর্ণ হইতে থাকিলে ইহা অতি সুন্দর ঔষধ।
১৭) শিরঃপীড়ায় মস্তক বরফের ন্যায় শীতল অনুভব করে এবং কেহ হাত দিলেও ঐরূফ শীতলতা অনুভূত হয়। মস্তকের অস্থিনিচয়ের সংযোগস্থলে অধিকতর বেদনা হয়।
১৮) ইহা বয়ঃব্রণের খুব ভাল ঔষধ। লাল ব্রণে সমস্ত মুখ পূর্ণ হইয়া যায়।
১৯) উদরাময়ে সবুজবর্ণ, পিচ্ছিল, তরল, উষ্ণ মল বায়ুসহ নির্গত হওয়া অতিশয় নির্দিষ্ট। ২০) ভুক্তদ্রব্য সমীকরণের অভাববশতঃ যে কোন পীড়ায় ইহার ব্যবহার স্বতঃসীদ্ধ।
২১) অজীর্ণ পীড়ায় শীতল পানীয় ও খাদ্য, আইসক্রীম সেবনে, সবুজ ও সরস ফল ভক্ষণ এবং গুরুপাক দ্রব্যাদি সহ্য হয় না- খাইলেও পেটকামড়ানি, বমন ও উদরাময়ের বৃদ্ধি হয়। গ্রীষ্মকালীন উদরাময়ে বিশেষ উপযোগী।
২২) শিশুর দুগ্ধ সহ্য হয় না, পেট কামড়ায় এবং সামান্য মাত্র দুগ্ধ পান করিলেও ছানার ন্যায় জমা জমা দুর্গন্ধ ও অম্লগন্ধযুক্ত (নেট-ফস) বমন থাকিলে ইহা অব্যর্থ।
২৩) শিশুরা সর্বদাই খাই খাই করে। বয়ষ্কদেরও অতি ক্ষুধা পরিলক্ষিত হয়।
২৪) যে সমস্ত বালিকা বিদ্যালয়ে অধ্যয়ণ করে, তাহাদের শিরঃপীড়া।
২৫) ধুমপানের প্রবৃত্তি পরিত্যাগের জন্য ইহার 5ম শক্তি বিশেষ কার্যকরী।
২৬) ইহা পিত্তশিলার উৎপত্তি নিবারণে অমোঘ।
২৭) ইহা গলগন্ডের প্রধান ঔষধ।
২৮) প্রচারক, গায়ক ও বক্তাদিগের অতিরিক্ত স্বরযন্ত্রের চালনাবশতঃ স্বরভঙ্গ ( ফেরাম ফস)। অবিরত গলা খাঁকর দিয়া গলা পরিস্কার করিতে হয়।
২৯) শিশুর কাশিতে কাশিতে দমবন্ধ হইবার উপক্রম হয়, শ্বাস-প্রশ্বাস ঘণ ও ক্ষুদ্র হয়। অত্যন্ত কষ্টকর হুপিং কাশিতে এবং যখন কশি কিছুতেই সারিতে চাহে না, তখনি ইহার ব্যবহার ব্যঞ্ছনীয়।
৩০) ছানির প্রারম্ভাবস্থায় এই ঔষধ ব্যবহার করিলে আর পীড়া বর্ধিত না হইয়া সারিয়া যায়। সমস্ত লক্ষণই দক্ষিণ চক্ষুতে বৃদ্ধি পায়; দক্ষিণ মস্তকেও শিরঃপীড়া উপস্থিত হয়।
৩১) পলিপাস রোগে ইহা এক প্রধান ঔষধ। নাসিকার এই রোগ হইলে রোগীর ঘ্রাণশক্তি অতিশয় দুর্বল হয়।
৩৩) রজোদর্শনকালে বালিকারা অতিশয় শীর্ণ, ভীত ও চঞ্চল স্বভাবের হয়।
৩৪) যে সমস্ত স্ত্রীলোক রেকেটিক সন্তান প্রসব করে, তাহাদের গর্ভাবস্থায় এই ঔষধ 2/1 মাত্রা করিয়া ব্যবহার করিলে ভবিষ্যতে রিকেটিক সন্তান হওয়া দোষ নিবারিত হয় এবং শিশুর অস্থিসকলও পুষ্ট হয়।
৩৫) পুষ্টিকর আহার্যের অভাবে, অথবা ভুক্তদ্রব্য সমীকরণের অভাববশতঃ যে সমস্ত বালিকা রক্তহীন, ফ্যাকাশে ও দুর্বল হইয়া পড়ে, তাহাদের স্বল্পরজঃ ও কষ্টরজঃ পীড়ায় ইহা বিশেষ উপযোগী। এই অবস্থায় বালিকাদের কার্যে অনুৎসাহ এবং ক্লান্তির ভাব দেখা যায়।
৩৬) ঘনঘণ অথবা বিলম্বিত রজঃস্রাব।
৩৭) স্ত্রীলোকদিগের অস্বাভাবিক বা পাগল করা কামেচ্ছা এই ঔষধে হ্রাস হয়।
৩৮) জরায়ুর দৌর্বল্য শিথিলতাবশতঃ জরায়ুর নির্গমন বা স্থানচ্যুতি এবং তজ্জনিত বিবিধ যন্ত্রণা ( ক্যাল্ক-ফ্লুওর, কেলি ফস)।
৩৯) শ্বেতপ্রদর, কাশি, প্রমেহ, কানপাকা, চর্মপীড়া ইত্যাদিতে ইহা অন্ডলালাবৎ গাঢ়, চটচটে ও স্বচ্ছ স্রাবই লক্ষণ থাকিলে।
৪০) যুবকদিগের স্বপ্নদোষ নিবারণে ইহার নিম্নক্রম বিশেষ ক্ষমতাশালী। অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ বা কাম পরিচালনাজনিত বিবিধ কুফলে, এমন কি-মৃগী ইত্যাদি হইলেও ইহার ব্যবহার স্বতঃসিদ্ধ।
৪১) বহুমুত্ররোগে অতিশয় শীর্ণতা, অদম্য পিপাসা ও ক্ষুধাহীনতা থাকিলে ইহা অতিশয় কার্যকরী।
৪২) ভগন্দর অস্ত্র করিবার পর যে সমস্ত পীড়া হয়, তাহাতে ইহা উপযোগী। কাশি ও ভগন্দর পর্যায়ক্রমে হ্রাস বৃদ্ধি হয়।
৪৩) গুহ্যদ্বারে স্নায়ুশূল বেদনায়- সেক্রাম অস্থির বেদনা মলত্যাগের সময় হইতে রাত্রিতে শয়নকাল পর্যন্ত থাকে।
৪৪) ঠান্ডা লাগার জন্য হস্ত পদের নানাস্থানে বেদনা হয়।
৪৫) লাম্ব্যাগো পীড়া প্রাতঃকালে বৃদ্ধি হইলে ইহা অতি উৎকৃষ্ট ঔষধ।
৪৬) বাতের বেদনা স্থান হইতে স্থানান্তরে চলিয়া বেড়ায় (কেলি সালফ)। বাতাক্রান্ত স্থান শীতল ও অসাড় বোধ হয়। বাতের বেদনা জনিত অস্থিরতা রাত্রিতে বৃদ্ধি পায় এবং নড়াচড়া করিলে উপশম প্রাপ্ত হয়। ঠান্ডা লাগিয়া ঘাড়ের পেশীসমূহ কঠিন ও বেদনাক্রান্ত হয়।
৪৭) এই ঔষধের সর্বপ্রকার পীড়া রাত্রকালে, শীতলতায়, ঋতু পরিবর্তনে, জলে ভিজিলে ও নড়াচড়ায় বৃদ্ধি।
৪৮) উষ্ণতায়, চুপচাপ থাকিলে ও গ্রীষ্মকালে সমস্ত পীড়াই হ্রসপ্রাপ্ত হয়। কেবল বাতপীড়ায় নড়াচড়ায় রোগী উপশম প্রাপ্ত হয়। হ্রাস বৃদ্ধি দৃষ্টে সমস্ত পীড়াতেই ইহা ব্যবহার করা হয়।
বিশেষত্ব (Peculiarity) | জীর্ণ শীর্ণ স্ক্রোফুলা শিশুর সর্বপ্রকার রোগেই ইহা অমৃত বিশেষ। ঐ প্রকার শিশু প্রায়ই কোন না কোন অস্থিপীড়ায় ভোগে। দন্তোদ্গমকালীন তড়কা, জ্বর, উদরাময় ইত্যাদি যাবতীয় উপসর্গে ইহা ব্রহ্মাস্ত্র। সর্দি, কাশি, প্রমেহ, শ্বেতপ্রদর, চর্মপীড়া ইত্যাদি যে কোন রোগে অণ্ডলালাবৎ, গাঢ়, চটচটে ও স্বচ্ছ স্রাব নির্গত হইলে এই ঔষধ নিঃসন্দেহে প্রয়োগ করা যায়। ভুক্তদ্রব্য সমীকরণের অভাববশতঃ যাবতীয় পীড়ায় ইহাই প্রধান ঔষধ। যুবকদিগের স্বপ্নদোষ ও অতিরিক্ত কাম পরিচালনাজনিত যাবতীয় ব্যাধিতে ইহা অদ্বিতীয়। যক্ষারোগে, শীর্ণতা রোগে, অথবা বিনা করণে শীর্ণ হইতে থাকিলে এই ঔষধের নামই প্রথমে স্মরণ হয়। ভগ্ন অস্থি জোড়া লাগাইতে ইহা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট ঔষধ আর নাই।
শারীরিক আকৃতি- শিশুর শরীর অত্যন্ত জীর্ণ, অস্থিসার, পেট ডাগরা (Flabby abdomen), অথবা উদরের নিমগ্নতা (Abdomen sunken) এবং সে কোন না কোন অস্থিপীড়ায় ভোগে। তাহার মস্তকটি অত্যন্ত বৃহৎ, করোটির অস্থি অত্যন্ত পাতলা এবং মনে হয় যেন হস্ত স্পর্শনেই ইহা ভগ্ন হইয়া যাইবে। ফন্টানেল, অর্থাৎ ব্রহ্মরন্ধ্র সকল ( Fontanelles) এবং করোটির অস্থিনিচয়ের সংযোজন স্থানসমূহ বহুদিন পর্যন্ত অযুক্তাবস্থায় থাকে, কিংবা যুক্ত হইয়া পুনরায় খুলিয়া যায়। মস্তকে প্রভূত ঘর্ম হয়।
কাহার ও কাহারও মেরুদণ্ডের বক্রতা (Curvature of the spine) সময়ে সময়ে লক্ষিত হয়- মেরুদণ্ড এত কমজোর যে, শিশু শরীরের সমস্ত ভার যেন বহন করিতে সমর্থ নহে। তজ্জন্য দেরিতে হাঁটিতে শিখে। গ্রীবার জোরও এত কম যে, মাথায় ভার বহন করিতে সমর্থ হয় না; ফলে মস্তক অবনমিত হইয়া পড়ে, আর সেই জন্য কেবল ক্রন্দন করে।
ক্যাল্কেরিয়া ফসে শরীরের পোষণ ক্রিয়ার বিবিধ গোলযোগ দৃষ্ট হয় এবং পুষ্টির অভাবজনিত ইহার পীড়ায় ইহাই একমাত্র সহায়। ইহা রক্তহীন ফ্যাকাশে ব্যক্তির পক্ষে বিশেষ উপযোগী। যদিও ইহা ক্ষীণকায় ব্যক্তির পক্ষে উপযোগী, কিন্তু পুষ্টির অভাবজনিত স্থূল হইলেও অত্যাবশ্যকীয়।
সাইলিসিয়ার সহিত প্রভেদ- ক্যাল্কেরিয়া ফসের সহিত সাইলিসিয়া অনেক লক্ষণে সমতুল্য। উভয় ঔষধই স্ক্রোফুলা রোগীর উপযোগী। ক্যাল্কেরিয়া ফসে যেরূপ শিশুর মস্তকটি বৃহৎ, মস্তকের অস্থির জোড়ার ধারগুলি অনেক দিন পর্যন্ত খোলা, মেরুদণ্ডের অস্থির বক্রতা, পেট ডগরা বা ঢোকা, শিশুর দেরিতে হাঁটা, দাঁত ওঠা প্রভৃতি লক্ষণ আছে -- সাইলিসিয়াতেও তাহা আছে। ক্যাল্কেরিয়ার যেমন ঠাণ্ডা, স্যাঁত-স্যাতানিতে, নড়িলে চড়িলে রোগলক্ষণের বৃদ্ধি হয়--- সাইলিসিয়াতেও তদ্রুপ।
সতর্কতাঃ অধিক দিন ব্যবহার করিতে হইলে 12X শক্তির নিম্নে ব্যবহার না করাই ভাল।
অধিক ব্যবহৃত শক্তিঃ 6X, 12X
[ক্যাল্কেরিয়া ফসফরিকাম ( Calcarea Phosphoricum) [ Calc. Phos.] best remedy for hydrocephalus, marasmus, bone fracture, Headache, brain fag, cataract, insanity, delirium, coryza, bleeding of the nose, dental pan, diarrhoea, dyspepsia, leucorrhoea, nymphomania, pruritus, cataract, acne, polypus, spasms, convulsions, colic, goitre, anaemia, amenorrhoea, dysmenorrhoea, masturbation, leucorrhoea, phthisis, all kinds of cough, hoarseness, debility, lumbago, rheumatism, paralysis, leukaemia, fever, রিকেট, হাড় ভাঙ্গা, শিরঃপীড়া, সর্বপ্রকার মস্তিস্ক-বিকৃতি, প্রলাপ, মস্তিস্কশূণ্যতা, ছানি, চক্ষুপীড়া, কর্ণপীড়া, বয়ঃব্রণ, অর্ধশিরঃশূল, পলিপাস, সর্দি, দাঁতের বেদনা, উদরাময়, অজীর্ণ, শিশু বমন, আক্ষেপ, তড়কা, শূল, গলগন্ড, স্বল্পরজ, কষ্টরজ, জরায়ুর স্থানচ্যুতি, শ্বেতপ্রদর, প্রুরাইটাস, স্ত্রীলোকের কামোম্মাদতা, স্বপ্নদোষ, অপরিমিত ইন্দ্রিয়চালনাবশতঃ পীড়া, ক্ষয়কাশি, সর্বপ্রকার কাশি, হুপিং কাশি, ডিপথিরিয়া, টনসিল প্রদাহ, স্বরভঙ্গ অন্ডকোষের পীড়া, ভগন্দর, পিত্তশিলা, বহুমূত্র, শয্যামূত্র, অসাড়ে মূত্রত্যাগ, ব্রাইটস পীড়া, প্রমেহ হৃৎপিন্ডের পীড়া, দূর্বলতা, কটিবাত, বাত, পক্ষাঘাত, লিউকিমিয়া, জ্বর রোগে ব্যবহৃত ঔষধ] [শারিরিক ও মানসিক লক্ষণ থাকা জরুরী]
Also Known as: Calc. Phos. CP, C.P. Calc Phos, ক্যালকেরিয়া ফস, ক্যাল ফস, বায়োকেমিক ঔষধ ক্যালকেরিয়া ফস,
সুন্দর
উত্তরমুছুন