কষ্টিকাম (Causticum) [কষ্টিক চুন ও বাইফসফেট অব পটাশ থেকে প্রস্তুত]
কষ্টিকাম (Causticum) [কষ্টিক চুন ও বাইফসফেট অব পটাশ থেকে প্রস্তুত]
যে সকল লোকের চুল কাল, ও পেশীতন্তু দৃঢ়, যাহারা দূর্বল, সোরাদোষদুষ্ট, গাত্রচর্ম অত্যন্ত হলদে ও মলিন, যাহাদের শ্বাসযন্ত্র ও মুত্রযন্ত্র সংক্রান্ত পীড়া জন্মানর প্রবণতা থাকে তাহাদের পক্ষে উপযোগী।
যে সকল শিশুর চুল ও চোখের তারা কাল যাহারা কোমল ও অনুভূতিপ্রবণ, দন্তোদ্গমকালে যাহাদের মলদ্বার, কুঁচকি প্রভৃতি স্থানের ছাল উঠিয়া যায়( লাইকো), অথবা দাঁত উঠার সময় যাহাদের আক্ষেপ দেখা দেয় তাহাদের পক্ষে উপযোগী (ষ্ট্যানাম)।
দূর্বলকর রোগের ফলে অথবা মানসিক সঙ্ঘাতের ফলে মস্তিস্কের ও মেরুমজ্জার ক্রিয়াগত বিশৃঙ্খলা, উহার পরিণতি পক্ষাঘাতে।
মস্তক-ত্বক, গলা, শ্বাসযন্ত্র, সরলান্ত্র, মলদ্বার, মুত্রনালী, যোনিপথ, জরায়ুতে হাজিয়া যাওয়া বা ক্ষতবৎ বেদনা ( থেৎলাইয়া যাওয়ার ন্যায় বেদনা- আর্নিকা, মচকাইয়া যাওয়ার ন্যায়-রাস)।
বিষাদভাব, দুশ্চিন্তা, শোক অথবা দুঃখ হইতে বিষন্ন ও হতাশ, তৎসহ ক্রন্দন; শিশু অত্যন্ত সামান্য কারণে কাঁদিতে থাকে।
অপরের কষ্টে সহানুভূতিসম্পন্ন।
দীর্ঘস্থায়ী শোক ও দুঃখ হইতে পীড়া ( ফস এসিড), নিদ্রাশূণ্যতা, রাত্রিজাগরণ হইতে পীড়া (কক্কিউল, ইগ্নে), আকস্মিক মনবেগ যথা ভয়, আতঙ্ক, আনন্দ হইতে পীড়া (কফিয়া, জেলস); ক্রোধ, বিরক্তি হইতে পীড়া, উদ্ভেদ বসিয়া যাওয়ার ফলে পীড়া)।
শিশুর হাঁটা শিখতে বিলম্ব হয় (ক্যাল্ক ফস)।
শিশু দৃঢ় পদক্ষেপে হাটিতে পারে না এবং সহজেই পড়িয়া যায়।
কোষ্ঠবদ্ধতা, ঘনঘন নিষ্ফল মলবেগ (নাক্স); দাঁড়ান অবস্থায় ভালভাবে মলত্যাগ করিতে পারে, অর্শ জন্য মলত্যাগক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়, আঠালো, চকচকে, চর্বির মত মল, শিশুদের রাত্রিকালীন শয্যামূত্র রোগসহ কোষ্ঠবদ্ধতা।
মূত্র অসাড়ে নির্গত হয়, কাশিতে, হাঁচিতে, নাক ঝাড়িতে অনিচ্ছায় মূত্রপাত ( পালস, স্কুইলা, ভিরেট)।
কাশি, তৎসহ বক্ষে হাজাভাব ও ক্ষততা, গায়ের তুলিয়া ফেলিতে পারে না, উহা গিলিতে বাধ্য হয় ( আর্নিকা, কেলি কার্ব); এক ঢোক ঠান্ডা জল পান করিলে কাশির উপশম, নিশ্বাস ত্যাগকালে কাশি ( একোন), তৎসহ নিতম্ভস্থানে বেদনা, হুপিং কাশির শেষে অবশিষ্ট কাশি, উহাতে প্রধানতঃ রাত্রিকালে গায়ের উঠা।
স্বরভঙ্গ, তৎসহ হাজাভাব এবং স্বরলোপ; প্রাতঃকালে বৃদ্ধি (সন্ধ্যাকালে বৃদ্ধি-কার্ব ভেজ, ফস)।
রাত্রিকালে কোন অবস্থানেই শন্তি পায় না, এক মূহুর্ত চুপ করিয়া থাকিতে পারে না ( ইউপেটো, রাস)।
সর্বদা নড়াচড়া করিতে বাধ্য হয়, কিন্তু তাহাতে আরাম পায় না।
ভালভাবে আবৃত হইয়াও গরম বোধ করে না, কিন্তু উত্তাপে উপশম হয় না।
মুর্ছাভাবের ন্যায় শক্তিলোপ, দূর্বলতা ও কম্পন।
ক্ষতচিহ্ন, বিশেষতঃ পোড়া ক্ষতের চিহ্ন তাজা হইয়া উঠে, নতুন করিয়া ক্ষত জন্মে, পুরাতন আঘাতচিহ্ন পুনরায় পাকিয়া উঠে; রোগী বলে, “অগ্নিদগ্ধ হইবার পর হইতে ঐগুলি আর ভাল হয় নাই।”
ঋতুস্রাব অতি শীঘ্র শীঘ্র, অতি অল্প পরিমাণে, স্রাব কেবলমাত্র দিবাভাগে, শয়ন করিলে স্রাব বদ্ধ হইয়া যায়।
পক্ষাঘাত-বিশেষ কোন অঙ্গের, বাকযন্ত্রের, জিহ্বার, মুখমন্ডলের হস্ত-পদাদির, মুত্রস্থলীর, সাধারণতঃ দক্ষিণ পার্শের; ঠান্ডা বাতাস বা বাতাসের ঝাপটা লাগিয়া, টাইফয়েড, টাইফাস জ্বর অথবা ডিপথেরিয়ার পরবর্তী; পক্ষাঘাত ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়।
চক্ষুর উপর পাতা ঝুলিয়া পড়ে, উহা তুলিয়া রাখিতে পারে না (কলো, জেলস, গ্রাফাই;-উভয় চক্ষুপাতা-সিপিয়া)।
বাতরোগ, তৎসহ সঙ্কোচন পেশীগুলির আকুঞ্চন, সন্ধিগুলির আড়ষ্টতা, টানভাব, পেশীগুলি হ্রস্ব হইয়া যায় ( এমন মিউ, সাইমেক্স, গুয়াইয়াকাম, নেট্রাম মিউ)।
আঁচিল-বৃহৎ, অসমান, সময়ে সময়ে বোঁটার সহিত ঝুলিয়া থাকে, সহজেই রক্তপাত হয়, উহা হইতে রসানি নির্গত হয়, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমস্ত শরীরব্যাপী আঁচিল, চক্ষুর পাতার উপরে, মুখমন্ডলে, নাকের উপর আঁচিল।
রোগীর সাময়িকভাবে কিছুটা উন্নতি হয়, তারপর রোগী সেই “একই অবস্থায়” থাকিয়া যায় (সোরিন, সালফ)।
সম্বন্ধ-অনুপুরক-কার্ব ভেজ, পেট্রোসিলি।
প্রতিকুল সম্বন্ধ- ফস, ফসফরাসের পূর্বে বা পরে ব্যবহার্য নহে, সর্ব সময়েই বিরুদ্ধে-এসিড সমূহ, কফিয়া।
তুলনীয়, আর্নিকা-গয়ের গিলিয়া ফেলে; জেলস, গ্রাফাই, সিপিয়া-অক্ষিপুট পতনে; স্বরভঙ্গে-রুমেক্স ও কার্বভেজ, যখন বৃদ্ধিলক্ষণ পরিবর্তিত হইয়া সন্ধ্যাকালে দেখা দেয়; পুরাতন স্বরনাশে-সালফ।
কষ্টিকাম-সীসক বিষাক্ততা জনিত পক্ষাঘাতের প্রতিবিধান করে ( প্রেসের কম্পোজিটরগণের মুখে করিয়া টাইপ ধরার কুফল); খোস-পাচঁড়ায় মার্কারি ও সালফারের অপব্যবহার জনিত কুফল দূর করে।
ইহা প্রধানতঃ দক্ষিণ পাশেই আক্রমণ করে।
উপচয়- পরিষ্কার সুন্দর আবহাওয়ায়, বাহিরের বাতাস হইতে গরম ঘরে প্রবেশ করিলে ( ব্রায়ো), ঠান্ডা বাতাসে বিশেষতঃ ঠান্ডা বাতাসের ঝাপটায়, ঠান্ডা লাগাইলে, ভিজিলে বা স্নান করিলে।
উপশম-আদ্র, স্যাৎসেতে আবহাওয়ায়, গরম বাতাসে।
কোন মন্তব্য নেই